২৮ জুন, ২০১৯, শুক্রবার, মুন্সিগঞ্জ : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (আইবিপিসি) যৌথ উদ্যোগে মুন্সিগঞ্জে দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার খাহ্রা- চুড়াইন আদর্শ ডিগ্রি কলেজ অডিটরিয়ামে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচেতনতা কর্মসূচি’ শিরোনামে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মসিউর রহমান মামুন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম হাতিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তিতে যে জাতি পিছিয়ে থাকবে, সফলতা তাদের জন্য অধরা হয়ে যাবে। রাজধানীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উপজেলা এবং গ্রাম গঞ্জের শিক্ষার্থীরাও তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়াতে এই উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে। কম্পিউটার, স্মার্টফোন এবং ডিজিটাল ডিভাইসের মূল্য হাতের নাগালে হওয়াতে মানুষ সহজেই বর্হিবিশ্বের এগিয়ে যাওয়ার সুত্র সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছে। আইবিপিসি এবং বিসিএসকে এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
তিনি আরো বলেন, মুন্সিগঞ্জের সঙ্গে রাজধানীর দুরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে এই দুরত্ব পাড়ি দিতে যে সময়ের দরকার হয়, তা অর্ধেক হয়ে যাবে। বর্তমান সরকার শিক্ষা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে উন্নয়নের শর্ত হিসেবে বিবেচনা করছে। এর সুফল ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। সরকারের সুদৃষ্টির কারণেই শিক্ষার্থীরা এখন উপজেলার কলেজে পড়েও রাজধানীর কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাচ্ছে।
কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি ইতিবাচক ধারণা রাখে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষাখাতকে সমৃদ্ধ করা সরকারের এক বিরাট সাফল্য। পরীক্ষার হলে সিসিটিভি ক্যামেরা, এটেন্ডেন্ট মেশিন, উন্নত ল্যাবের কারণে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দক্ষ করে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এভাবে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলে ছাত্র-ছাত্রীরা কাছ থেকে এই খাতে সুপরিচিত মুখগুলোকে দেখার সৌভাগ্য পাবে। একদিন তারাও তথ্যপ্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিবে এই আশা সৃষ্টি হবে তাদের মনে। তাই এমন মহতি উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
কর্মসূচির মূখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক কে এম হাসান রিপন। তথ্যপ্রযুক্তির হালনাগাদ চিত্র সম্পর্কে তিনি কর্মসূচিতে আগত শিক্ষার্থীদের স্বচ্ছ ধারণা দেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ফোর্থ ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন, রোবটিক্স, অটোমেশনের মাধ্যমে গাড়ির নিয়ন্ত্রনসহ নিত্যনতুন প্রযুক্তি কিভাবে মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানার আগ্রহ প্রতীয়মান হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস এর মহাসচিব মোশারফ হোসেন সুমন। তিনি বলেন, সারা দেশে তথ্যপ্রযুক্তির সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বিসিএস। এরই অংশ হিসেবে মুন্সিগঞ্জে আজকের এই আয়োজন। মুন্সিগঞ্জের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহ লক্ষণীয়। তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজেদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে এই কর্মসূচি তাদেরকে একটি সম্যক ধারণা দিবে। বিসিএস ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বরাবরের মতো সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যন্থ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও যেন তথ্যপ্রযুক্তির আলোতে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারে এই লক্ষ্যে বিসিএস উদ্যোগী হয়ে সারাদেশেই প্রচার এবং প্রসার চালিয়ে যাচ্ছে।
কর্মসূচির সার্বিক সহযোগিতা করেন এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার সমিতি (ইসিএস) এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তুহিন চৌধুরী। এতে মতিঝিল কম্পিউটার সোসাইটির সভাপতি আবুল হাসানসহ অন্যান্য আইসিটি নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।