বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপিত
২৬ ডিসেম্বর, রবিবার, ঢাকা : আইসিটি শিল্পের প্রধান বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর উদযাপন করেছে। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সংগঠনটি নারায়ণগঞ্জ-রুপগঞ্জ এর ভূলতায় সুবর্ণগ্রাম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে দিনব্যাপী ‘বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপন’ শীর্ষক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২৫ ডিসেম্বর শনিবার বেলুন উড়িয়ে ‘বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপন’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ. মান্নান, এমপি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস এর উপদেষ্টা স্বদেশ রঞ্জন সাহা, বিসিএস এর প্রথম সভাপতি এস এম ইকবাল, দ্য কম্পিউটার্স লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিক-ই-রব্বানি ও বর্তমান মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’র ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বিসিএস এর এই কার্যক্রম শুধু দেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই প্রশংসিত। তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আমি যে ভূমিকায় রয়েছি, সে স্থান থেকে বিসিএস এর প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন ছিলো এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের পথচলা এখন ভবিষ্যতকে জয় করার। নিজেদের সন্তানদের জন্য আমরা আরো সুন্দর এবং নিরক্ষরমুক্ত দেশ গঠনে আমরা একসাথে কাজ করে যাবো। আমি বিসিএস এর পথচলার পথ সুগম হোক এই কামনা করি। বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, করোনাকালীন সময়ের পরে ৩৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠান করতে পেরে আমরা আনন্দিত। বিসিএস আশির দশক থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দ্বারা এই খাতকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। এই পথযাত্রায় আমাদের সাফল্যও রয়েছে বেশ। ৩৫ বছরের এই যাত্রায় জেআরসি রিপোর্ট, কম্পিউটারকে ভ্যাট ট্যাক্স মুক্ত করে মানুষের হাতে হাতে কম্পিউটার পৌঁছে দেয়াসহ বিগত করোনাকালীন সময়েও বিসিএস প্রযুক্তি ব্যবসায়ী এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে গেছে। আজ আমরা সাড়ে চার হাজার সদস্য এবং সদস্য পরিবার ও আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে আমাদের মেগা ইভেন্ট সম্পন্ন করতে পেরেছি বলে আমরা গর্বিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা এই আয়োজনকে উপভোগ করবো। প্রযুক্তি খাতে আমাদের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে বলে আমি আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে বিসিএস শাখা কার্যকরী কমিটি প্রতিনিধির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। এসময় বিসিএস সহসভাপতি ও ৩৫ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. জাবেদুর রহমান শাহীন, যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, পরিচালক মোশারফ হোসেন সুমন এবং মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়াসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বড়দিনের আমেজে প্রোগ্রাম ভেন্যুতে প্রবেশে শিশুদের জন্য ছিল নানা রকম খেলনা উপহার। এছাড়াও বিভিন্নরকম খেলাধুলা, নাচ গান এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনে উৎসব মূখর ছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন। এছাড়াও অংশগ্রহনকারীরা ভেন্যু ভ্রমণ করার জন্য ঘোড়ার গাড়ি, বৈদ্যুতিক রেলগাড়িতে ভ্রমণসহ বিভিন্ন আয়োজনে অতিথিরা চমকপ্রদ সময় কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতা ‘ বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ এবং ‘তরুণ প্রজন্মের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু’ বিষয়ে দুইটি বিভাগে বিজয়ীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। দুপুর ২.৩০ এ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ‘৩৫ বছর উদযাপন’ অনুষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠানদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ্য সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
এছাড়াও ১৯৮৭ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত সকল কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপণী অনুষ্ঠানে এন এম জিয়াউল আলম বলেন, প্রথম থেকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সঙ্গে বিসিএস এর সখ্যতা। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এবং আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে আমি বিসিএসকে শুভেচ্ছা প্রদান করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপসহ সংগঠনের ভূমিকা হিসেবে বিসিএস কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি সংগঠনের মিলন মেলা এবং ৩৫ বছর উদযাপনে প্রযুক্তি প্রেমীদের অংশগ্রহণে বিসিএস এর কার্যক্রম আরো জোরদার হবে। প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার চেষ্টায় সফলতা আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক এবং বিসিএস সহসভাপতি মো. জাবেদুর রহমান শাহীন বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই আয়োজন সম্পন্ন করেছি। আপনাদের সকলের অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ যারা এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কাজ করে গিয়েছেন তাদের প্রতি আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই অনুষ্ঠানের সফলতা আপনাদের। মেগা ইভেন্টের আয়োজনে ভুল ত্রুটিগুলোকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে প্রযুক্তি খাতে বিসিএস এর ৩৫ বছর উদযাপন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেই আমি কামনা করছি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মিরাক্কেল রনি নামে খ্যাত আবু হেনা রনি হাসির খোরাক যোগান। অভ্যর্থনা এবং অতিথি ব্যবস্থাপনা পরিচালনায় ছিলেন বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন। বিসিএস ৩৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে বিসিএস উপদেষ্টা মোজাম্মেল হক বাবু, বিসিএস এর প্রাক্তন সভাপতি আলী আশফাক, ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার, প্রাক্তন সহসভাপতি এটি শফিক উদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন মহাসচিব মো. আজিজুর রহমান, প্রাক্তন যুগ্ম মহাসচিব এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ মমলুক সাবির আহমেদ, প্রাক্তন পরিচালক এম শহিদুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, বিসিএস এর জ্যেষ্ঠ্য সদস্য জিল্লুর রহমান, প্রযুক্তি খাতের প্রখ্যাত ব্যক্তিদের পদচারণায় সারা দেশ থেকে বিসিএস সদস্যদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠান মহামিলন মেলায় পরিণত হয়। কেক কাটা, আতশবাজি, র্যাফেল ড্র এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে সহযোগি প্রতিষ্ঠান ছিল এসার, এডিএন, আসুস, বি-ট্র্যাক, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ডিজিটালএক্স, গিগাবাইট, হালিমা গ্রুপ, হিকভিশন, ক্যাসপারাস্কি, লেনোভো, এলজি, মাইহেলথবিডি, নগদ, নেটিস, নাকটেল গ্লোবাল, ওরিয়েন্ট বিডি লিমিটেড,, পাকিজা টেকনোভেশন লিমিটেড, প্রিজম ইআরপি, রিভ সিস্টেম, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, স্মার্ট টেকনোলজি (বিডি) লিমিটেড, স্টারটেক টোটাল আইটি সল্যিউশন, সিনেসিস আইটি, টেন্ডা, টিআইপি, টিপি লিঙ্ক, ট্রান্সসেন্ড, ইউসিসি, ভ্যালুটপ, ভিউসনিক, ওয়ালটন, এক্সট্রিম এবং ফাইবার এট হোম।